রাজারহাটের গাঁড়াগড়িতে বিগত বছর জুলাই মাসে ইয়ারুল মোল্লা নামে ভাঙরের বাসিন্দা এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় শান্তুনু মণ্ডল, বাবুসোনা বিশ্বাস, ভাস্কর বিশ্বাস, হরিদাস হাতি নামে চারজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই মামলাতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রশ্নের মুখে পড়ল পুলিশ। এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha) এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। ধৃতদের আইনজীবী অপলক বসু তাঁর মক্কেলদের জামিনের আবেদন করেন। আদালতের কাছে ধৃতদের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেলদের জামিন পাওয়া উচিত কারণ, মৃত যুবকের পরিবার জানিয়েছে রাজনৈতিক কারণে এই খুন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অভিযুক্তদের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, প্রকৃত দোষীদের আড়াল কর মামলা ধামাচাপা দিতে অন্যদের আটকে রাখতে চাইছে পুলিশ। আইনজীবী অপলক বসু আদালতকে জানিয়েছেন, এই মামলার অন্যতম প্রধান সাক্ষীও অভিযোগ করেছেন যে তাঁকে জোর করে সাক্ষ্যদানে বাধ্য করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের আইজীবীর সওয়াল শুনে বিচারপতি মান্থা পুলিশের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, পুলিশ কী এভাবে ছ’মাস কাউকে জেলে বন্দি করে রেখে তাঁদের মৌলিক অধিকার হরণ করতে পারে? জবাবে রাজারহাটের এসিপি সম্বিতি চক্রবর্তী আদালতকে জানান, যিনি সাক্ষী দিয়েছেন, তিনি স্নাতক। সবটা পড়েই তিনি স্বাক্ষর করেছেন। জবাবে খানিক ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি মান্থা পুলিশকে প্রশ্ন করেন, ‘স্নাতক কাউকে ভুল বুঝিয়ে বা হুমকি দিয়ে সই করানো যায় না কিন্তু, হার্ভার্ড থেকে পাশ করে আসা কাউকে সেটা করা যায়?’ পুলিশের তরফে আদালতকে জানানো হয়েছে গোটা ঘটনায় বিষয়ে তারা লিখিতভাবে নিজেদের বক্তব্য আদালতকে জানাতে চান। আদালত মঙ্গলবার পুলিশ নিজেদেরে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে।
জানা গিয়েছে এই খুনের ঘটনায় ১০ জুলাই FIR হলেও মামলার নথিকে তারিখের ত্রুটি রয়েছে। সেখানে ১১ জুলাইয়ের উল্লেখ রয়েছে। মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি, এই ঘটনায় শাসকদলের কয়েকজন জড়িত। যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে এই মামলার কোনও যোগ নেই। অন্যদিকে রণজিৎ নাগ নামে এক ব্যক্তি আদালতকে জানিয়েছেন, তাঁকে জোর করে এই মামলার সাক্ষী করা হয়েছে। ঘটনার সময় তিনি গ্যারেজে ছিলেন। গোটা ঘটনার পর আদালত দু’পক্ষকেই হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদলত জানিয়েছে, প্রয়োজনে অন্য কোনও সংস্থার হাতে এই মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হব। আগামী শুনানি গুলিতে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি রণজিৎ নাগ নামে ওই ব্যক্তির নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Leave a Reply