মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন

বার জমেনি গদখালীর ফুলের বাজার

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২
jessore-1-2202130932

১৬ ডিসেম্বরকে ঘিরে ফুলের চাহিদা থাকে প্রচুর। আর সেই চাহিদা মেটাতে যশোরের গদখালী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল। কিন্তু এ বছর জমেনি ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালী ফুলের বাজার। কাঙ্ক্ষিত ফুল বেচাকেনা হচ্ছে না এ ফুলের বাজারে। ফলে ফুলচাষি এবং পাইকারি ব্যবসায়ী উভয়ের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে গদখালী ফুলের পাইকারি বাজারে প্রচুর ফুল চোখে পড়লেও কাঙ্ক্ষিত বেচাকেনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে এ বছর লাভের পরিবর্তে উল্টো লোকসানের মুখে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

ফুলচাষি এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিবছর এ পাইকারি বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের ফুল ঢাকাসহ দেশের প্রায়ই সকল জেলায় যায়। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা ফুল কিনতে আসেন। কিন্তু এ বছর দূরের ক্রেতার সমাগম একেবারেই কম। যে কারণে আশানুরূপ ফুল বেচাকেনা হচ্ছে না। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, কৃষি সামগ্রীসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দেশের জনগনের আর্থিক স্বচ্ছলতা কমে যাওয়াকে ফুলের বাজারে মন্দার কারণ হিসেবে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে- প্রতি এক শ পিস গোলাপ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, রজনীগন্ধা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, গ্লাডিওলাস ১ হাজার ১০০ টাকা, জারবেরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৭০ টাকা, গাঁদা ফুল প্রতি হাজার ১০০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি আব্দুল জব্বার বলেন, ফুল একটি সৌখিন জিনিস। বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ সৌখিন জিনিস কেনাকাটার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর ফুলের বাজারে মন্দা একটু বেশি মনে হচ্ছে।

বর্নী গ্রামের ফুলচাষি আশরাফ হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সে তুলনায় বাজারে ফুলের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যায় তা আবার পরিবহন খরচে চলে যায়। প্রশাসন বাজার মনিটরিং করলে পূর্বের বাজারমূল্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। অন্যথায় অনেক ফুলচাষি ফুল চাষ বাদ দিয়ে অন্য পেশায় যুক্ত হয়ে যাবে। তখন আর এই ঐতিহ্যবাহী গদখালী ফুলের রাজধানীর নাম থাকবে না।

কুষ্টিয়ার ফুল ব্যবসায়ী মকবুল হাসান বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৩, ১৪, ১৫ ডিসেম্বর এই তিন দিন বেচাকেনা হয়। তবে এ বছর তেমন বেচাকেনা হয়নি। বেশিরভাগ অনুষ্ঠানে ইভেন্ট কোম্পানির লোকেরা প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার করে, যে কারণে কাঁচা ফুলের চাহিদা কমে যাচ্ছে। যশোর থেকে ফুল নিয়ে কুষ্টিয়ায় বিক্রি করে পোষায় না।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, প্রতিবছরের তুলনায় এ বছর ফুলের বাজার বেশি মন্দা হওয়ায় ফুলচাষিদের মন খারাপ। প্রশাসন মনিটরিং শুরু করলে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, এ বছর ফুলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা কমেছে। এজন্য কিছু কিছু ফুলের মূল্যও কমতে পারে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর