মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৮ অপরাহ্ন

শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানই সেমিতে

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২
0896cf9c05add0e78956331ce21e293196312a9bb4cb4fbe

বাইশ গজের ক্রিকেটে শেষ বলে কথা নেই! মাঠের বাইরে রয়ে যায় নানা সমীকরণ। তেমনই অলৌকিক কিছু দেখার আশায় ছিল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। সকাল গড়াতেই অ্যাডিলেড ওভালে সুখবরটা এনে দেয় নেদারল্যান্ডস। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বড় দলকে হারিয়ে যে অঘটনের জন্ম দেয় এরপর সমীকরণটা এমন দাঁড়ায়- পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারে বাংলাদেশ। যদি-কিন্তুর সব হিসাব এক বিন্দুতে-শুধু জয়! তবে সেই সম্ভাবনার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি টিম বাংলাদেশ। আর সব সমীকরণ মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানই নিশ্চিত করে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল।

রবিবার অ্যাডিলেড ওভালে পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। জবাব দিতে নেমে ১১ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে তিন পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। বাদ পড়েন হাসান মাহমুদ, ইয়াসির আলি ও শরিফুল ইসলাম। তাদের জায়গা নেন এবাদত হোসেন, সৌম্য সরকার ও নাসুম আহমেদ।
পাকিস্তানের পক্ষে ইনিংসের প্রথম ওভার করতে আসেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। চতুর্থ বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে আউটসাইড-এজড হন শান্ত। তবে ওই বল পয়েন্ট দিয়ে হয়েছে বাউন্ডারি। প্রথম ওভার থেকে বাংলাদেশ নেয় ৬ রান।

তৃতীয় ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকান লিটন। তার শর্ট বল ক্রিজ ছেড়ে একটু বের হয়ে লিটন দুর্দান্ত টাইমিংয়ে পুল করেন। সেটি মিডউইকেটের ওপর দিয়ে হয় ছক্কা। ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরেছিলেন লিটন। তবে পঞ্চম বলে কাট করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা শান মাসুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৮ বলে ১০ রান করে আউট হন। ২১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর শান্তের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার। তাদের জুটি ভাঙে শাদাব খানের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে সৌম্য ক্যাচ তুলে দেন মাসুদের হাতে। ১ চার ও ছক্কায় ১৭ বলে ২০ রান করেন তিনি। এই জুটি ভেঙে গেলে ক্রিজে আসার পর প্রথম বলেই সাকিবের বিরুদ্ধে আসে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন।

আম্পায়ারও সাড়া দেন তাতে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাটে লেগেছে বল। আম্পায়াররা অবশ্য মনে করেছেন, ব্যাট মাটিতে লেগেছে; তবে ভিডিও দেখে বোঝা গেছে, ব্যাটে বল লাগার সময় মাটিতে ছিল না। মাঠে স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন সাকিব, কিন্তু শেষ অবধি শূন্য রানেই ফিরতে হয় তাকে।

এর কিছুক্ষণ পর ফিরে যান শান্তও। ৭ চারে ৪৮ বলে ৫৪ রান করে ইফতেখার আহমেদের বলে বোল্ড হন তিনি। তার বিদায়ের পর ছন্দপতন হয় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। ১১ বলে ৫ রান করে মোসাদ্দেক বোল্ড হন আফ্রিদির বল বুঝতে না পেরে। সোহান কাভারের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ৩ বলে শূন্য রানে দেন ক্যাচ।

এরপর আফিফ চেষ্টা করলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। শেষ অবধি অপরাজিত থাকেন তিনি, করেন ২০ বলে ২৪ রান। তার কল্যাণেই আদতে বলার মতো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের পক্ষে ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন আফ্রিদি। দুই উইকেট পান শাদাব খান।

১২৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা পাকিস্তানের ইনিংসের তৃতীয় বলে ক্যাচ তুলেছিলেন রিজওয়ান। কিন্তু সেটি ফেলে দেন বাংলাদেশের উইকেটকরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। ওই ওভারটি করছিলেন তাসকিন আহমেদ, তখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি রিজওয়ান। পরের বলেই ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলেন তিনি।

শেষ অবধি এবাদত হোসেন ওভারে রিজওয়ান যখন ফেরেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে, তখন ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ বলে ৩২ রান করে ফেলেছেন তিনি। এর আগেই অবশ্য দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন নাসুম আহমেদ।

এই স্পিনারের ওভারে ৩৩ বলে ২৫ রান করে সাজঘরে ফেরত যান বাবর আজম। বাবর-রিজওয়ান ফেরার পর বাংলাদেশ চাপ ধরে রাখে পাকিস্তানের ওপর। এর মধ্যে ১১ বলে ৪ রান করে মোহাম্মদ নেওয়াজ রান আউট হন লিটন দাসের দুর্দান্ত থ্রোতে। সম্ভাবনা তখন একটু হলেও উঁকি দিচ্ছিল।

কিন্তু সবকিছুর ইতি ঘটে তাসকিন আহমেদের করা ১৬তম ওভারে। তৃতীয় বলে একটি নো বল করেছিলেন তাসকিন। ফ্রি হিট থেকে তাকে ছক্কা হাঁকান মোহাম্মদ হারিস। এই ব্যাটারই শেষ অবধি দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের গন্তব্যে।

সাকিব আল হাসানের বলে আউট হওয়ার আগে ১ চার ও ২ ছক্কায় ১৮ বলে ৩১ রান করেছিলেন তিনি। এছাড়া ১৪ বলে ২৪ বলে রান করেন শান মাসুদ। বাংলাদেশের পক্ষে এক উইকেট করে নিয়েছেন সাকিব, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও এবাদত হোসেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর